বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
গ্রামীন সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে “লাভ নয় লোকসান নয়” নীতিমালার ভিত্তিতে গঠিত নারায়নগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি উন্নত গ্রাহক সেবা প্রদানের লক্ষ্যে বিভাজিত হয়ে নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ (তারাবো পৌরসভা ব্যতিত) ও আড়াইহাজার উপজেলা দুটি নিয়ে ২৭/০৫/২০১৫ খ্রিঃ এ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নারায়নগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২। শুরু থেকে অত্র পবিস ভোৗগলিক এলাকায় নভেম্বর ২০২৩ খ্রিঃ পর্যন্ত ২,৯২১ কিঃমিঃ বৈদ্যুতিক লাইন নির্মাণের মাধ্যমে ২,৮১,৯৬০ জন গ্রাহক সংযোগ সুবিধা সৃষ্টি করে আবাসিক ২,৫৬,৩৪১ টি; বাণিজ্যিক ১২,৩৯২ টি; বৃহৎ, মাঝারী ও ক্ষুদ্র শিল্প- ৭,৭৮৭ টি, সেচ- ১,৭১০ টি, অন্যান্য- টি সহ সর্বমোট ২,৮১,৯৬০ টি সংযোগ প্রদান করেছে।
নারায়নগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ বানিজ্যিক ভাবে অগ্রযাত্রা শুরু করে ১’লা জুলাই/২০১৫ খ্রিস্টাব্দে। অবিভক্ত অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ পবিসের এ অংশের সিষ্টেম লস ছিল ১০.৭৮%। সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলশ্রুতিতে সিষ্টেম লস হ্রাস পেয়ে বর্তমানে ৪.১২% এবং বিদ্যুৎ বিল আদায়ের হার ডিসেম্বর/২০১৪ পর্যন্ত যেখানে ছিল ৮৪.৪৭%, সেখানে নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ৯৫.১৭%। ইহাতে অত্র পবিস আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে। কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে সমিতির অর্থনৈতিক অবকাঠামো দিন দিন মজবুত হচ্ছে। আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানে কিভাবে বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা যায়, সে বিষয়ের উপর লিফলেট, মাইকিং, ডিস চ্যানেলে ব্যাপক প্রচার করা হচ্ছে এবং গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রাহকদের সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য প্রতি মাসের শেষ শনিবার সদর দপ্তর সহ সকল জোনাল অফিসে সকাল ১১ঃ০০ ঘটিকা হতে সারাদিন ব্যাপী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে “পাবলিক হেয়ারিং ডে” প্রতিপালন করা হচ্ছে। ফলে গ্রাহকগণের সমিতির ব্যবস্থাপনার উপর আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমের অভীষ্ট লক্ষ্য পল্লীবাসীর অবহেলিত জীবন যাত্রার মান উন্নত করা। নারায়নগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ কার্যক্রমের শুরু থেকে অন্যান্য জেলার মত নারায়ণগঞ্জ জেলার কৃষি, শিল্প ও আর্থ সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভ’মিকা রেখে চলেছে। সকল শ্রেণি পেশার মানুষের ব্যাপক কর্মসংস্থানসহ নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনিমার্ণে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম ব্যাপক ভূমিকা রাখছে এবং নূতন নূতন প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রমে। ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে বাপবিবোর্ড ও পবিস সমূহ পারস্পরিক মতবিনিময় ও তথ্য আদান করতে পারছে। কম্পিউটারাইজড বিলিং সিস্টেম, অন-লাইন স্টোর ম্যানেজমেন্ট, অন-লাইন রিক্রটমেন্ট, অন-লাইন আবেদন ও গ্রাহক সংযোগ ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইলেকট্রক্সি পদ্ধতির প্রয়োগের ফলে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম Enterprise Resource Planning (ERP) তথা ইউনিফাইড সফটওয়্যারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যা উন্নত গ্রাহক প্রদানের নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে। নারায়নগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর নিজস্ব ওয়েব সাইট চালুর মাধ্যমে ডিজিটাল বিশ্বে প্রবেশের ফলে অবাধে তথ্য আদান প্রদানের দ্বার উন্মূক্ত হয়েছে। এছাড়াও টেলিটক মোবাইল কোম্পানীর রিটেইলারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ বিল গ্রহণ করা হচ্ছে।
সারা বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ০১ টি করে সুইচ বন্ধ রাখলে প্রায় ৩০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় হয়, যা দিয়ে ১টি জেলাকে সম্পুর্ণ আলোকিত করা সম্ভব। ০১টি পরিবার প্রতিদিন ০১ ইউনিট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করলে সাশ্রয়কৃত বিদ্যুতের পরিমান হয় ২৫০ মেগাওয়াট। ০১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের খরচ হয় প্রায় ১০ কোটি টাকা। প্রয়োজন না হলে প্রতিটি ঘরে ১টি করে সুইচ বন্ধ করে অন্যকে বিদ্যুৎ সুবিধা ভোগ করতে সহযোগীতা করুন। দেশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নয়নে শরিক হউন। অত্র পবিস শিল্প সমৃদ্ধ, পবিসে নতুন নতুন উপকেন্দ্র নির্মাণের মাধ্যমে গ্রাহক সংযোগ সুবিধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। পবিসের গর্বিত মালিক হিসাবে বৈদ্যুতিক লাইনের তার, ট্রান্সফরমার ও অন্যান্য মালামাল চুরি রোধ কল্পে প্রত্যেক গ্রাহক সদস্যদের এগিয়ে আসার জন্য বিনীত ভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।
গ্রাহকের নিকট হতে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ বিলের অর্থই পবিসের আয়ের একমাত্র উৎস। দ্রুত গ্রাহক সেবার স্বার্থে বর্তমানে এসএমএস এর মাধ্যমে নির্ধারিত টেলিটক মোবাইল ফোনে বিদ্যুৎ বিল গ্রহনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তাই সময়মত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে সংযোগ বিচ্ছিন্নের ভোগান্তি এড়াতে গ্রাহক সদস্যবৃন্দকে অনুরোধ করছি। অবৈধ সংযোগ এবং পার্শ্ব সংযোগ প্রদান করা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। তাছাড়া অবৈধ সংযোগ ও পার্শ্ব সংযোগ এর কারণে পবিসের মূল্যবান সম্পদ ট্রান্সফরমার ওভার লোডেড হয়ে যায় এবং কখনও কখনও বৈদ্যুতিক দূর্ঘটনায় প্রাণহানির ঘটনা সংঘটিত হয়। কাজেই অবৈধ সংযোগ নেয়া এবং পার্শ্ব সংযোগ গ্রহন ও প্রদান হতে সকলকে বিরত থাকার অনুরোধ করছি।
বৈদ্যুতিক লাইনের সংস্পর্শে থাকা গাছপালা কেটে নিরবচ্ছিন্ন ও নিরাপদ বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখতে বিদ্যুৎ কর্মীদের সহযোগিতা করার অনুরোধ করছি। সেই সাথে বিদ্যুৎ চুরি রোধ করন ও নিয়মিতভাবে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে গ্রাহক সেবার মান আরও উন্নত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি। পাশাপাশি ট্রান্সফরমার চুরি রোধকল্পে শিকল-তালা ব্যবহারের জন্য সকল গ্রাহক সদস্যদেরকে অনুরোধ করছি। এমনকি রাত্রে বিদ্যুৎ চলে গেলে ট্রান্সফরমার চুরি রোধকল্পে দ্রুত ট্রান্সফরমারের নিকট যাওয়ার জন্য অনুরোধ করছি। বর্তমানে গ্রাহক আবেদন করলে যোগ্য সকল আবেদনকারীদের স্বল্পতম সময়ে বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দালালদের সংস্পর্শ পরিহার করে সরাসরি অফিসে যোগাযোগ করে উত্তম গ্রাহক সেবা গ্রহনের জন্য সবাইকে অনুরোধ করছি।
সমিতির বিভিন্ন কার্যক্রমে সম্মানিত গ্রাহক সদস্য, সমিতি বোর্ড, বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড, সমিতির কর্মকর্তা/কর্মচারীবৃন্দ,স্থানীয় প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সংবাদিকবৃন্দ সহ সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নিকট সহযোগিতা কামনা করছি। মহান আল্লাহ্ আমাদের সহায় হউন।
প্রকৌঃ নূর মোহাম্মদ
সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস